1. admin@dainikvorernotunbatra.com : batra@admin :
বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:১৭ অপরাহ্ন

প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে গুরুত্ব পাবে যেসব বিষয়

  • প্রকাশিত: রবিবার, ৭ জুলাই, ২০২৪
  • ৬৬ বার শেয়ার হয়েছে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার (৮ জুলাই) চার দিনের চীন সফরে যাচ্ছেন। যার প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত। ৮ থেকে ১১ জুলাই তার এই সফরে ঢাকা-বেইজিং উভয়পক্ষই বেশ কয়েকটি বিষয়ে প্রাধান্য দিচ্ছে।

দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, কৃষি, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, শিক্ষা প্রভৃতি বিষয়ে আলোচনা প্রাধান্য পাবে। এসব খাতে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে অন্তত ১৫টি চুক্তি ও সমঝোতা সইয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরকে সামনে রেখে ইতোমধ্যেই বার্তা দিয়েছে বেইজিং। চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে পারস্পারিক রাজনৈতিক বিশ্বাসকে আরও গভীর করতে চায় দেশটি।

একই সঙ্গে দুই দেশের উন্নয়ন কৌশলগুলোকে আরও একত্রিত, বৈশ্বিক উন্নয়ন উদ্যোগ বাস্তবায়নে গতি বাড়ানো, বৈশ্বিক নিরাপত্তা উদ্যোগের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে একটি নতুন স্তরে উন্নীত করতে চায় বেইজিং।

এর আগে পাঁচ বার চীন সফর করেছেন শেখ হাসিনা। চীন বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার, তাই এবারের সফরটিকে ভিন্ন মাত্রার গুরুত্ব দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

সে কারণে প্রধানমন্ত্রীর সফরে ঢাকার পক্ষ থেকে উন্নয়ন ইস্যুকেই প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে চীনের সঙ্গে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হবে।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমস্যা, জটিল ভূ-রাজনৈতিক রসায়ন, তিব্বত ও দক্ষিণ চীন সমুদ্র নিয়ে জটিলতাসহ বিভিন্ন কারণে এই সফরকে আগের যেকোনও সময়ের চেয়ে ভিন্নভাবে দেখছেন তারা। এ সফরে দ্বিপক্ষীয় বিষয় ছাড়াও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়েও আলোচনা হবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

সফরে যে বিষয়গুলোকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে, সেগুলো হচ্ছে– পায়রা বন্দরকে কেন্দ্র করে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নের জন্য বেইজিংয়ের সহযোগিতা। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে কাজ করতে আগ্রহ দেখিয়েছে চীন।

চীন বাংলাদেশেকে ৫০০ কোটি ডলার সমমূল্যের ঋণ সহযোগিতা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ওই ঋণের জন্য প্রস্তাবিত সুদের হার কমানোর অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ। এটির বিষয়ে বেইজিংয়ে সুরাহা হওয়ার বিষয়ে ঈঙ্গিত করেছে কূটনৈতিক সূত্র।

মেট্রোরেল-২ প্রকল্পে চীনের সম্পৃক্ততার বিষয়টি নিয়ে যৌথ বিবৃতিতে উল্লেখ থাকার সম্ভাবনা আছে। তবে সরাসরি হয়তো ওই প্রকল্পের নাম না থেকে ভিন্নভাবে উল্লেখ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

সফরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত বিশেষ অগ্রাধিকার পাচ্ছে। এই খাতে অন্তত ৭ চুক্তি ও সমঝোতা সইয়ের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ দুটি এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস জাতীয় গ্রিডে আনার পরিকল্পনা নিয়েছে। তবে এই গ্যাস আনার জন্য পাইপলাইন স্থাপন করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন হবে একশ কোটি মার্কিন ডলার। চীনের সঙ্গে এ বিষয়ে চুক্তি হতে পারে।

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রিজার্ভ সঙ্কট দেখা দিয়েছে। রিজার্ভ সঙ্কট মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সহায়তার ঘোষণা দিতে পারে চীন।

বাংলাদেশের প্রথম ডিজিটাল ব্যাংক নগদের সঙ্গে চীনের একটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যেও চুক্তি সইয়ের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে ডিজিটাল লেনদেন যেন আরো সহজ হয়, সে লক্ষ্যে এই চুক্তি সই হচ্ছে।

রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবিলায় ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগে একযোগে কাজ করছে বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চীন। তবে রাখাইনে অস্থিতিশীলতা তৈরি হওয়ায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সম্ভব হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা উঠতে পারে।

এ বিষয়ে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক বলেন, ১০ বছর আগেও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক বা বৈশ্বিক অবস্থা তেমন প্রভাব ফেলতো না। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক অনেকটা নির্ভর করে বেইজিংয়ের সঙ্গে দিল্লির সম্পর্ক বা ওয়াশিংটনের সঙ্গে দিল্লি বা বেইজিংয়ের সম্পর্কের ওপর।

চীনে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মুনশি ফায়েজ আহমেদ বলেন, তিনটি দেশ ভিন্ন ভিন্ন কারণে বাংলাদেশের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সেগুলো হচ্ছে-ভারত, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের বৃহৎ একটি উন্নয়ন অংশীদার চীন এবং এবারের সফরে অর্থনেতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে বড় ধরনের আলোচনার সুযোগ আছে বলে তিনি জানান।

প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেমাবার ৮ জুলাই বেইজিং পৌঁছাবেন। ৯ জুলাই তিনি সেদেশের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠক শেষে চুক্তি ও সমঝোতা সই হবে। ১০ জুলাই চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই দিন চীনের পার্লামেন্ট ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেস অব চায়নার প্রেসিডেন্ট ঝাও লেজির সঙ্গেও বৈঠক করবেন তিনি। এছাড়া চীন সফরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যাচ্ছেন একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল। তারা সেখানে চীনা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

এর আগে ২০১৯ সালের জুন মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফরে গিয়েছিলেন। ৫ বছর পর আবারও চীন সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2019
কারিগরি সহযোগিতায়: জাগো হোষ্টার বিডি